
টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার পঞ্চমবারের সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্ত হয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মামলার প্রধান আসামি টাঙ্গাইল-৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আমানুর রহমান খান রানাকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে সাক্ষ্য গ্রহণ ও বাদীর জেরা শুরু হয়। দুপুর দেড়টায় এ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। আগামী ২৭ জুন এই মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন আদালতের বিচারক।
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল আদালতের পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি এমপি আমানুর রহমান খান রানার উপস্থিতিতে বুধবার বেলা ১১টার দিকে টাঙ্গাইল প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া এজলাসে ওঠেন।
এরপর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ ও বাদীর জেরা শুরু হয়। আদালতে মামলার বাদী ও নিহতের স্ত্রী নাহার আহমদের জেরা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বাকি আরও দুই সাক্ষী নিহতের ছেলে আহমেদ মজিদ সুমন ও মেয়ে ফারজানা আহমেদ মিথুনের হাজিরা আদালতে দাখিল করা হয়। পরে আদালতে বাদী নিহতের স্ত্রী নাহার আহমদের জেরা সমাপ্ত হয়। আগামী ২৭ জুন এই মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন।
কারাগার থেকে এ মামলার প্রধান আসামি এমপি রানাসহ টাঙ্গাইল কারাগারে থাকা আরও তিন আসামি মোহাম্মদ আলী, আনিছুর রহমান রাজা ও সমিরকে আদালতে হাজির করা হয়। এছাড়া জামিনে থাকা আসামি নাসির উদ্দিন নুরু, মাসুদুর রহমান মাসুদ ও ফরিদ আহম্মেদ আদালতে হাজিরা দেন। গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে চাঞ্চল্যকর এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে।
দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর এমপি রানা গত ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এই আদালতেই আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার-১ এ কারাবন্দি রয়েছেন। বেশ কয়েক দফা উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালতে আবেদন করেও জামিন পাননি তিনি।
উল্লেখ্য, বিগত ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলাটি টাঙ্গাইল মডেল থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরবর্তীতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে এবং গত বছর ৩ ফেব্রুয়ারি এমপি রানা ও তার তিন ভাইসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে গোয়েন্দা পুলিশ।